হযরত মাওলানা মোহাম্মদ আযীযুর রহমান (কায়েদ সাহেব হুজুর)
(জন্ম ১৯১৩- মৃত্যু ২০০৮)
আল্লামা আযীযুর রহমান নেছারাবাদী রহ.
: এদেশের গুণীজনদের মধ্যে ঝালকাঠির কায়েদসাহেব হুজুর(রহ.) অন্যতম। তিনি ১৯১৩ইং সালে ঝালকাঠি জেলার বাসন্ডা(বর্তমাননেছারাবাদ) গ্রামে সম্ভ্রান্ত মুসলিমপরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ক্ষণজন্মা এইগুণী ব্যক্তিত্ব আমরণ দেশওজাতির খেদমত করেগেছেন। তাঁর কর্মজীবন মূলত শিক্ষকতার মহান পেশা দিয়েই শুরু। ১৯৪২ সাল থেকে ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত টানা২৫ বছর তিনি ছারছীনা দারুচ্ছুন্নাত আলীয়া মাদরাসায় শিক্ষকতা ও ভাইসপ্রিন্সিপ্যাল হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বিদগ্ধ এগুণী শিক্ষকের ছোঁয়ায় অসংখ্যগুণী জন তৈরি হয়েছে। যাদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপকড. মু. মুস্তাফিজুররহমান, অধ্যাপকড. আ.র.মআলীহায়দারমুর্শিদী, প্রফেসরএম.এ. মালেক, ছারছীনা দারুচ্ছন্নাত আলীয়া মাদরাসার সাবেক অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দু ররব খান, মরহুম মাওলানামো: আমজাদ হোসাইন, প্রখ্যাত মুফাসসিরে কুরআন মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, দৈনিক সংগ্রামের সাবেক সম্পাদক মরহুম অধ্যাপক আখতার ফারুক, দৈনিক ইনকিলাবের নির্বাহী সম্পাদক মাওলানা কবিরূহুল আমীন খান ও ইসলামী সমাজকল্যাণ পরিষদ চট্টগ্রামের সাবেক সভাপতি মরহুম মাওলানা শামসুদ্দিন উল্লেখযোগ্য। তিনি শিক্ষকতা থেকে অবসরেযা ও য়ারপর দক্ষিণাঞ্চলের আনাচেকানাচেশতশত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছেন। পশ্চাৎ পদনারী সমাজের উন্নয়নের জন্য ও তিনি অনেক অবদান রেখেছেন। তাঁর নিজ বাড়িতে প্রতিষ্ঠিত কামিল মাদরাসাকে তিনি বহুমুখী কমপ্লেক্সে পরিণত করেছেন। ৪২টি প্রতিষ্ঠান একমপ্লেক্সের অন্তর্ভুক্ত। হুজুর কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ঝালকাঠি এন.এস.কামিল মাদরাসা এখন বাংলাদেশের সেরা আদর্শ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
হযরত কায়েদ সাহেব হুজুরের জীবনের সবচেয়ে অনবদ্য অবদান হচ্ছে- এদেশের সকল মুসলমানকে একত্রিত করার প্রচেষ্টা। তিনি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করার অপূর্ব এক সূত্র আবিষ্কার করেছেন। তা হচ্ছে- ‘আলইত্তিহাদ মায়াল ইখতিলাফ’ তথা‘মতনৈক্য সহ ঐক্য’। ‘মতনৈক্যসহ ঐক্য’রআহ্বান সকলের কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য তিনি গঠনকরেন‘জমিয়াতুল মুসলিহীন’।তিনি মনে করতেন, বিভক্ত জাতি দিয়ে যেমনি দেশ গঠন করা যায়না, তেমনি ইসলাম কায়েম করা ও অসম্ভব। তাই নিজেদের মধ্যে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মত পার্থক্য থাকলেও তা নিয়েই দেশ, জাতি, রাষ্ট্র ও ধর্মের বৃহৎ স্বার্থ ও ইস্যুতে ঐক্যবদ্ধ হওয়া প্রয়োজন। ১৯৯৭ সালে তাঁর উদ্যোগে বাংলাদেশে সর্বপ্রথম সর্বদলীয় ইসলামী সম্মেলনের আয়োজন করা হয় ঝালকাঠিতে। মূলত ঐক্য সম্মেলন ছিল১৯৫২, ১৯৭০- এর ঐক্যের ডাকে রধারাবাহিকতার চূড়ান্ত রূপ। বর্তমানে দেশব্যাপী নাস্তিক্যবাদ বিরোধী যে আন্দোলন গড়ে উঠেছে সেখানে আমরা হযরত কায়েদ সাহেব হুজুরের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি। তিনি যদি আজ বেঁচে থাকতেন তাহলে নাস্তিকদের বিরুদ্ধে তিনিও ঝাঁপিয়ে পড়তেন সকলকে নিয়ে। জীবদ্দশায় তিনি প্রায়ই বলতেন, ‘আমাদের সংগ্রাম তিন শ্রেণীর বিরুদ্ধে- ভ-, নাস্তিক ও জালেম।’ মূলত এই তিন শ্রেণীর উৎপাতে গোটা দেশ আজ অতিষ্ঠ। বিশেষ করে, নাস্তিকরা যেভাবে ইসলাম, আল্লাহ - রাসূলের বিরুদ্ধে উঠে- পড়ে লেগেছে তা এক কথায় জঘন্য। হযরত কায়েদ সাহেব হুজুর ইসলামের এই জঘন্য অবমাননাকে মোটেই সইতে পারতেন না। হযরত কায়েদ সাহেব হুজুর (রহ.)- এর কাছে ধর্ম - বর্ণ নির্বিশেষে কাক্সিক্ষত মর্যাদা পেতেন। ঝালকাঠি অঞ্চলের হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরা তাঁকে দেবতাতুল্য মর্যাদা দিতেন। হুজুর যখন ঢাকায় কমফোর্ট হাসপাতালে অসুস্থাবস্থায় চিকিৎসাধীন ছিলেন তখন ঝালকাঠির সকল মন্দিরে তাঁর জন্য বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছিল। মুসলিমসম্প্রদায়ের একজন মানুষের জন্য হিন্দুদের মন্দিরে প্রার্থনার আয়োজন গোটা দুনিয়ার মধ্যে নজির সৃষ্টি করেছে। হুজুর ভালো জিনিস যেকারো থেকে গ্রহণ করতে দ্বিধা করতেননা। স্রষ্টাকে নিবেদিত রবীন্দ্রনাথঠাকুরের‘ তোমার প্রেমযে বইতে পারি এমন সাধ্যনাই.....’ গান সহ অনেক গান ইহুজুর নিজে গাইতেন। বাদ্যযন্ত্র ছাড়া ক্যাসেট তৈরি করে শুনতেন ও বিক্রি করার আদেশ দিতেন। নকুল কুমার বিশ্বাসের অনেক সমাজ-সংস্কারমূলক গানই হুজুর পছন্দ করতেন। হুজুর ছিলেন কর্মবীর। লোকজনকে কাজ করার উৎসাহ দিতেন। নিজের পয়সা য়মাল কিনে বেকার লোকদের ব্যবসা করতে দিতেন। হুজুরের মুখে সবসময় ধ্বনিতহতো- ‘ওগো মুসলমানের ছেলে কাজ করিলে মান যাবে তোর কোন হাদিসে পেলে’।
হযরত কায়েদ সাহেব হুজুর (রহ.) বরাবরই চরম পন্থার বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেছেন। সন্ত্রাসবাদকে তিনি মনে প্রাণে ঘৃণা করতেন। সমাজেবা রাষ্ট্রে সংঘটিত যে কোনো খারাপ কর্মের বিরুদ্ধে তিনি নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের আয়োজন করতেন। ‘সংঘাত নয় শান্তি’ এটাই ছিল হুজুরের মূলনীতি। তবে বাতিলের কাছে কখনো মাথা নত করার পাত্র হুজুর ছিলেননা। ক্ষণজন্মা এই মহা পুরুষ তাঁর কর্মময় জীবনের ইতিটেনে ২০০৮ সালের ২৮ এপ্রিল ইন্তেকাল করেন। তাঁর ইন্তেকালের খবর শুনে সারা দেশ থেকে লাখ লাখ মানুষ ভিড় জমান ঝালকাঠির নেছারাবাদে। তাঁর নামাজে জানাযায় দশ বর্গকিলোমিটার জুড়ে প্রায় পাঁচ লাখ মানুষের সমাগম ঘটেছিল।
হযরত কায়েদ সাহেব হুজুরের স্মৃতি ও আদর্শ রক্ষায় আমাদের অনেক করণীয় আছে। তাঁর আদর্শ শুধু মুখে প্রচার করলেই হবেনা, বাস্তবে পরিণত করার চেষ্টা করতে হবে। মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের জন্য তিনি যে সাধনা করেগেছেন তাকে আমাদের মূল্য দিতে হবে। তাঁর লেখা বই- পুস্তক ব্যাপক আকারে মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে। হুজুরের প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠান সমূহ বাঁচিয়ে রাখতে আমাদের এগিয়ে আসতে হবে। হুজুরের জীবন ও কর্ম নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায় গবেষণা করা ও একান্ত প্রয়োজন। ইসলাম পন্থীদের জন্য ঐক্যের প্লাটফর্ম হিসেবে‘ জমিয়াতুল মুসলিহীন’ নামে যে সংগঠন তিনি রেখে গেছেন তার হাল ধরেছেন তাঁরই সুযোগ্য পুত্র অধ্যক্ষ্ মাওলানা খলীলুর রহমান নেছারাবাদী। আমাদের সকলের উচিত মুসলিম উম্মাহর ঐক্য সাধনে উক্ত সংগঠনের কার্যক্রমকে দেশব্যা পিছড়িয়ে দেয়া।
কালজয়ী মহাপুরুষ হযরত মাওলানা মোহাম্মদ আযীযুর রহমানের জন্মনেছারাবাদ গ্রামে। তিনি দক্ষিন বাংলার একজন বিশিষ্ট পীর ও ঝালকাঠিবাসীর নয়নের মনি। তাঁর প্রতিষ্ঠিত নেছারাবাদ কামিল মাদ্রাসাটি দক্ষিণ বাংলা তথা বাংলাদেশের একটি অনন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে সবগৌরবে মাথা উঁচু করে আছে।
স্বনামধন্য কবি কামিনী রায়ের জন্ম ঝালকাঠির বাসন্ডা গ্রামে। তিনি তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের প্রথম মহিলা স্নাতক ।
কামিনী রায়ের জন্ম পূর্ববঙ্গের (বর্তমান বাংলাদেশের) বাকেরগঞ্জের বাসণ্ডা গ্রামে (বর্তমানে যা বরিশাল জেলার অংশ)। তাঁর পিতা চন্ডীচরণ সেন একজন ব্রাহ্মধর্মাবলম্বী, বিচারক ও ঐতিহাসিক লেখক ছিলেন। ১৯৭০ খ্রীস্টাব্দে চণ্ডীচরণ ব্রাহ্মধর্মে দীক্ষা লাভ করেন। পরের বছর তাঁর স্ত্রী-কন্যাও কলকাতায় তাঁর কাছে ব্রাহ্মধর্মে দীক্ষিত হন।[১] তিনি ব্রাহ্ম সমাজের বিশিষ্ট নেতা ছিলেন। তাঁর ভগিনী যামিনী সেন লেডি ডাক্তার হিসাবে খ্যাতিলাভ করেছিলেন।[২]
১৮৯৪ খ্রীস্টাব্দে কামিনীর সাথে স্টাটুটারি সিভিলিয়ান কেদারনাথ রায়ের বিয়ে হয়।[৩]
কন্যা কামিনী রায়ের প্রাথমিক শিক্ষার ভার চণ্ডীচরণ সেন নিজে গ্রহণ করেন। বার বৎসর বয়সে তাঁকে স্কুলে ভর্তি করে বোর্ডিংয়ে প্রেরণ করেন।[১] ১৮৮০ খ্রীস্টাব্দে তিনি কলকাতা বেথুন স্কুল হতে এন্ট্রান্স (মাধ্যমিক) পরীক্ষা ও ১৮৮৩ খ্রীস্টাব্দে এফ.এ বা ফার্স্ট আর্টস (উচ্চ মাধ্যমিক সমমানের) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। বেথুন কলেজ হতে তিনি ১৮৮৬ খ্রীস্টাব্দে ভারতের প্রথম নারী হিসাবে সংস্কৃত ভাষায় সম্মানসহ স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন।[২]
স্নাতক ডিগ্রী অর্জনের পর ১৮৮৬ সালেই তিনি বেথুন কলেজের স্কুল বিভাগে শিক্ষয়িত্রীর পদে নিযুক্ত হন। পরবর্তীকালে তিনি ঐ কলেজে অধ্যাপনাও করেছিলেন।
যে যুগে মেয়েদের শিক্ষাও বিরল ঘটনা ছিল, সেই সময়ে কামিনী রায় নারীবাদে বিশ্বাসী ছিলেন। তাঁর অনেক প্রবন্ধেও এর প্রতিফলন ঘটেছে। তিনি নারী শ্রম তদন্ত কমিশন (১৯২২-২৩) এর সদস্য ছিলেন।
শৈশবে তাঁর পিতামহ তাঁকে কবিতা ও স্তোত্র আবৃত্তি করতে শেখাতেন। এভাবেই খুব কম বয়স থেকেই কামিনী রায় সাহিত্য রচনা করেন ও কবিত্ব-শক্তির স্ফূরণ ঘটান। তাঁর জননীও তাঁকে গোপনে বর্ণমালা শিক্ষা দিতেন। কারণ তখনকার যুগে হিন্দু পুরমহিলাগণের লেখাপড়া শিক্ষা করাকে একান্তই নিন্দনীয় ও গর্হিত কাজ হিসেবে বিবেচনা করা হতো।[১] মাত্র ৮ বছর বয়স থেকে তিনি কবিতা লিখতেন। রচিত কবিতাগুলোতে জীবনের সুখ-দুঃখ, আশা-আকাঙ্ক্ষা, আনন্দ-বেদনার সহজ-সরল ও সাবলীল প্রকাশ ঘটেছে।[৩] পনের বছর বয়সে তাঁর প্রথম কাব্য গ্রন্থ আলো ও ছায়া প্রকাশিত হয় ১৮৮৯ খ্রীস্টাব্দে। এ গ্রন্থটির ভূমিকা লিখেছিলেন হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু প্রথমে এতে গ্রন্থকর্ত্রী হিসেবে কামিনী রায়ের নাম প্রকাশিত হয় নাই।[১]' তাঁর লেখা উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে -
|
|
অমিত্রাক্ষর ছন্দে রচিত 'মহাশ্বেতা' ও 'পুণ্ডরীক' তাঁর দু'টি প্রসিদ্ধ দীর্ঘ কবিতা।[২] এছাড়াও, ১৯০৫ সালে তিনি শিশুদের জন্য গুঞ্জন নামের কবিতা সংগ্রহ ও প্রবন্ধ গ্রন্থ বালিকা শিক্ষার আদর্শ রচনা করেন।
কামিনী রায় সবসময় অন্য সাহিত্যিকদের উৎসাহ দিতেন। ১৯২৩ খ্রীস্টাব্দে তিনি বরিশাল সফরের সময় কবি সুফিয়া কামালকে লেখালেখিতে মনোনিবেশ করতে বলেন।
তাঁর কবিতা পড়ে বিমোহিত হন সিবিলিয়ান কেদারনাথ রায় এবং তাঁকে বিয়ে করেন। ১৯০৯ খ্রীস্টাব্দে কামিনী রায়ের স্বামীর অপঘাতে মৃত্যু ঘটেছিল।[১] সেই শোক ও দুঃখ তাঁর ব্যক্তিগত জীবনে ব্যাপক প্রভাব ফেলে, যা তাঁর কবিতায় প্রকাশ পায়। তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও সংস্কৃত সাহিত্য দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন।
আপনারে লয়ে বিব্রত রহিত
আসে নাই কেহ অবনী `পরে
সকলের তরে সকলে আমরা
প্রত্যেকে মোরা পরের তরে।
মানব-জীবনের লক্ষ্য ও কর্মকান্ডের মূল লক্ষ্য কি হওয়া উচিৎ তা-ই আমরা জানতে পারি এই কাব্যাংশ থেকে; মানুষের এই জীবনের আলেখ্যের মূল রচিয়তা কবি কামিনী রায়। কীর্তনখোলা নদীর তীরে অবস্থিত পরাধীন ব্রিটিশ ভারতের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী অঞ্চল বঙ্গ প্রদেশস্থঃ চন্দ্রদ্বীপ; যা বর্তমানে বরিশাল নামে পরিচিত, অগ্নিযুগে ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলন-সংগ্রামে এর অবদান অতুলনীয়। এ অঞ্চল থেকে আমরা পেয়েছি অসংখ্য জগৎ বিখ্যাত শিল্পী-সাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ, দার্শনিক ও রাজনীতিবিদ যাদের মধ্যে শিল্প-সাহিত্য ক্ষেত্রে “রূপসী বাংলার” কবি জীবনান্দ দাশের পরেই প্রধান হচ্ছেন কবি কামিনী রায়। তিনি একাধারে ছিলেন একজন কবি, সমাজকর্মী এবং নারীবাদী লেখিকা; তদুপরি তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের প্রথম মহিলা স্নাতক।
শিক্ষা ও কর্মজীবনঃ
কামিনী রায়ের পড়াশুনার হাতেখড়ি তার পরিবারের মধ্যেই; বিশেষতঃ মায়ের কাছে। বাড়ীতেই তিনি বর্ণপরিচয় ১ম ও ২য় ভাগ এবং শিশুশিক্ষা শেষ করে ৯ বছর বয়সে স্কুলে ভর্তি হন এবং ঐ বছরই আপার প্রাইমারী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে প্রথম স্থান অর্জন করেন। এরপর ১৪ বছর বয়সে তিনি মাইনর পরীক্ষা দিয়ে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। কামিনী রায় ১৮৮০ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা বেথুন ফিমেল স্কুল হতে এন্ট্রান্স (মাধ্যমিক-এর সমমানের) পরীক্ষা ও ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দে ফার্স্ট আর্টস (উচ্চ মাধ্যমিক-এর সমমানের) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এই বেথুন কলেজ হতে তিনি ১৮৮৬ খ্রিস্টাব্দে ভারতের প্রথম নারী হিসেবে সংস্কৃত ভাষায় সম্মানসহ স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর তিনি বেথুন কলেজেই শিক্ষকতা শুরু করেন এবং পরবর্তীতে অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন।
সাহিত্য-রচনাঃ
কবি কামিনী রায় খুব অল্প বয়স থেকে সাহিত্য চর্চায় মনো নিবেশ করেন; মাত্র ৮ বছর বয়সে তিনি প্রথম কবিতা লিখেন। ১৮৮৯ সালে প্রকাশিত “আলো ও ছায়া” কামিনী রায়ের প্রথম কাব্য গ্রন্থ ; যার মাধ্যমে তিনি তৎকালীন পাঠক-সমাজের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হোন। তাঁর অন্যান্য উল্লেখযোগ্য কাব্যের মধ্যে রয়েছে নির্মাল্য (১৮৯১), মাল্য ও নির্মাল্য (১৯১৩), দ্বীপ ও ধূপ (১৯২৯), মহাশ্বেতা, পুন্ডরীক।
শিশুদের জন্য লিখিত গ্রন্থসমূহ হচ্ছে পৌরাণিকী (১৮৯৭), গুঞ্জন (১৯০৫), বালিকা শিক্ষার আদর্শ (১৯১৮), ঠাকুরমার চিঠি (১৯২৪) প্রভৃতি।
তার অনুবাদ গ্রন্থের মধ্যে ধর্ম্মপুত্র (১৯০৭) সবিশেষ উল্লেখ যোগ্য।
সনেট জাতীয় কাব্যের মধ্যে রয়েছে অশোক সঙ্গীত (১৯১৪), জীবন পথে (১৯৩০)।
তাঁর চন্দ্রাতীরের জাগরণ নাট্যকাব্যটি বিশেষ জনপ্রিয় হয়েছিল; এবং তার লেখা অন্যান্য নাটকের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে অম্বা (১৯১৫)।
স্বামী-সন্তান ও নিকটাত্মীয়দের অকাল-মৃত্যুর ফলে তার সাহিত্যের মধ্যে একধরণের ব্যাথ্যাতুর ও নৈসর্গপ্রিয়তার ভাব লক্ষ্যনীয়। ব্যক্তিগত বেদনা, দেশ প্রেম, জীবন চিন্তার নানাভাব বিভিন্ন রূপকল্পনা ও প্রতিমার মধ্য দিয়ে তাঁর কাব্যে নতুন রূপে প্রকাশ করেছেন; তার লেখায় মানবতাবোধ এবং নৈতিকতা প্রকাশই মূখ্য হয়ে দেখা দেয়। তবে ব্যক্তিগতভাবে তিনি রবীন্দ্র মন ও মানস দ্বারা প্রবলভাবে প্রভাবিত ছিলেন। আবার সংস্কৃত ভাষায় ব্যুৎপত্তি লাভের কারণে তার সাহিত্য-রচনাগুলো বিশেষভাবে সংস্কৃত অলংকরণ ও ভাবধারা দ্বারা প্রভাবিত।
নারী উন্নয়নেঃ
তৎকালীন সময়ে মেয়েদের শিক্ষাও বিরল ঘটনা ছিল, সেই সময়ে কামিনী রায় নারীবাদে বিশ্বাসী হয়ে উঠেছিলেন। লিখেছিলেন সকল অসঙ্গতির বিরুদ্ধে ও নারী জাগরণের পক্ষে। সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে; বিশেষতঃ করে নারী কল্যাণে তার অগ্রণী ভূমিকা ছিল। কামিনী রায় ভারতের প্রথম মহিলা অনার্স গ্র্যাজুয়েট এবং তিনি সব সময়ই শিক্ষানূধ্যায়ীদের ভালবাসতেন; উৎসাহ দিতেন, সহযোগীতা করতেন অন্য নারী সাহিত্যিকদের। তিনি ১৯২৩ এক সম্মেলণে বরিশাল আসলে কবি বেগম সুফিয়া কামালের সাথে পরিচিত হয়ে তাকে লেখা-লেখির বিষয়ে প্রবল উৎসাহ দেন এবং মনোনিবেশ করতে বলেন। তিনি ১৯২২-২৩ সালে নারী শ্রম তদন্ত কমিশনের সদস্য ছিলেন।
স্বীকৃতি ও সম্মনণাঃ
সাহিত্য ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে নারী জাগরণে আসামান্য অবদান এবং তৎকালীন পশ্চাদপদ সমাজের মধ্যে থেকেও প্রথম স্নাতক সম্মান ডিগ্রী অর্জন করায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কবি কামিনী রায়ের স্মরণে ১৯২৯ সাল থেকে “জগত্তারিনী পুরস্কার” প্রবর্তন করেছে। তিনি ১৯৩০ সালে বঙ্গীয় লিটারারি কনফারেন্সের সভাপতি ও ১৯৩২-৩৩ সালে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
মৃত্যুঃ
শেষজীবনে কবি কামিনী রায় ভারতের ঝাড়খন্ড রাজ্যের হাজারীবাগে বসবাস করতেন এবং ১৯৩৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর এখানেই তার জীবনাবসান ঘটে।
একটি কবিতাঃ
পাছে লোকে কিছু বলে
করিতে পারি না কাজ
সদা ভয় সদা লাজ
সংশয়ে সংকল্প সদা টলে-
পাছে লোকে কিছু বলে।
আড়ালে আড়ালে থাকি
নীরবে আপনা ঢাকি,
সম্মুখে চরণ নাহি চলে
পাছে লোকে কিছু বলে।
হৃদয়ে বুদবুদ মত
উঠে চিন্তা শুভ্র কত,
মিশে যায় হৃদয়ের তলে,
পাছে লোকে কিছু বলে।
কাঁদে প্রাণ যবে আঁখি
সযতনে শুকায়ে রাখি-
নিরমল নয়নের জলে,
পাছে লোকে কিছু বলে।
একটি স্নেহের কথা
প্রশমিতে পারে ব্যথা,-
চলে যাই উপেক্ষার ছলে,
পাছে লোকে কিছু বলে।
মহৎ উদ্দেশ্য যবে,
এক সাথে মিলে সবে,
পারি না মিলিতে সেই দলে,
পাছে লোকে কিছু বলে।
বিধাতা দেছেন প্রাণ
থাকি সদা ম্রিয়মাণ;
শক্তি মরে ভীতির কবলে,
পাছে লোকে কিছু বলে।
বাংলা কাব্যে নীতি-নৈতিকতার প্রসার ঘটে উনবিংশ শতাব্দীর শেষ ও বিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগে, যেখানে অন্যতম নারী সদস্য হিসেবে কবি কামিনী রায়কে আমরা নেতৃত্ব দিতে দেখি। আজ এই মহীয়সী নারীর মৃত্যু বার্ষিকীতে এক নারীর পক্ষ থেকে রইলো অপার শ্রদ্ধাঞ্জলি!
অঞ্জলি লহ মোর~ ~ ~
.
আল্লামা আযীযুর রহমান নেছারাবাদী রহ.
: এদেশের গুণীজনদের মধ্যে ঝালকাঠির কায়েদ সাহেব হুজুর (রহ.) অন্যতম। তিনি ১৯১৩ ইং সালে ঝালকাঠি জেলার বাসন্ডা (বর্তমান নেছারাবাদ) গ্রামে সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ক্ষণজন্মা এই গুণী ব্যক্তিত্ব আমরণ দেশ ও জাতির খেদমত করে গেছেন। তাঁর কর্মজীবন মূলত শিক্ষকতার মহান পেশা দিয়েই শুরু। ১৯৪২ সাল থেকে ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত টানা ২৫ বছর তিনি ছারছীনা দারুচ্ছুন্নাত আলীয়া মাদরাসায় শিক্ষকতা ও ভাইস প্রিন্সিপ্যাল হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বিদগ্ধ এ গুণী শিক্ষকের ছোঁয়ায় অসংখ্য গুণীজন তৈরি হয়েছে। যাদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. মু. মুস্তাফিজুর রহমান, অধ্যাপক ড. আ.র.ম আলী হায়দার মুর্শিদী, প্রফেসর এম.এ. মালেক, ছারছীনা দারুচ্ছন্নাত আলীয়া মাদরাসার সাবেক অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুর রব খান, মরহুম মাওলানা মো: আমজাদ হোসাইন, প্রখ্যাত মুফাসসিরে কুরআন মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, দৈনিক সংগ্রামের সাবেক সম্পাদক মরহুম অধ্যাপক আখতার ফারুক, দৈনিক ইনকিলাবের নির্বাহী সম্পাদক মাওলানা কবি রূহুল আমীন খান ও ইসলামী সমাজ কল্যাণ পরিষদ চট্টগ্রামের সাবেক সভাপতি মরহুম মাওলানা শামসুদ্দিন উল্লেখযোগ্য। তিনি শিক্ষকতা থেকে অবসরে যাওয়ার পর দক্ষিণাঞ্চলের আনাচে কানাচে শত শত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছেন। পশ্চাৎপদ নারী সমাজের উন্নয়নের জন্যও তিনি অনেক অবদান রেখেছেন। তাঁর নিজ বাড়িতে প্রতিষ্ঠিত কামিল মাদরাসাকে তিনি বহুমুখী কমপ্লেক্সে পরিণত করেছেন। ৪২টি প্রতিষ্ঠান এ কমপ্লেক্সের অন্তর্ভুক্ত। হুজুর কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ঝালকাঠি এন.এস. কামিল মাদরাসা এখন বাংলাদেশের সেরা আদর্শ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
হযরত কায়েদ সাহেব হুজুরের জীবনের সবচেয়ে অনবদ্য অবদান হচ্ছে- এদেশের সকল মুসলমানকে একত্রিত করার প্রচেষ্টা। তিনি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করার অপূর্ব এক সূত্র আবিষ্কার করেছেন। তা হচ্ছে- ‘আল ইত্তিহাদ মায়াল ইখতিলাফ’ তথা ‘মতনৈক্যসহ ঐক্য’। ‘মতনৈক্যসহ ঐক্য’র আহ্বান সকলের কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য তিনি গঠন করেন ‘জমিয়াতুল মুসলিহীন’। তিনি মনে করতেন, বিভক্ত জাতি দিয়ে যেমনি দেশ গঠন করা যায় না, তেমনি ইসলাম কায়েম করাও অসম্ভব। তাই নিজেদের মধ্যে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মতপার্থক্য থাকলেও তা নিয়েই দেশ, জাতি, রাষ্ট্র ও ধর্মের বৃহৎ স্বার্থ ও ইস্যুতে ঐক্যবদ্ধ হওয়া প্রয়োজন। ১৯৯৭ সালে তাঁর উদ্যোগে বাংলাদেশে সর্বপ্রথম সর্বদলীয় ইসলামী সম্মেলনের আয়োজন করা হয় ঝালকাঠিতে। মূলত এ ঐক্য সম্মেলন ছিল ১৯৫২, ১৯৭০-এর ঐক্যের ডাকের ধারাবাহিকতার চূড়ান্ত রূপ। বর্তমানে দেশব্যাপী নাস্তিক্যবাদ বিরোধী যে আন্দোলন গড়ে উঠেছে সেখানে আমরা হযরত কায়েদ সাহেব হুজুরের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি। তিনি যদি আজ বেঁচে থাকতেন তাহলে নাস্তিকদের বিরুদ্ধে তিনিও ঝাঁপিয়ে পড়তেন সকলকে নিয়ে। জীবদ্দশায় তিনি প্রায়ই বলতেন, ‘আমাদের সংগ্রাম তিন শ্রেণীর বিরুদ্ধে- ভ-, নাস্তিক ও জালেম।’ মূলত এই তিন শ্রেণীর উৎপাতে গোটা দেশ আজ অতিষ্ঠ। বিশেষ করে, নাস্তিকরা যেভাবে ইসলাম, আল্লাহ-রাসূলের বিরুদ্ধে উঠে-পড়ে লেগেছে তা এক কথায় জঘন্য। হযরত কায়েদ সাহেব হুজুর ইসলামের এই জঘন্য অবমাননা কোনো মতেই সইতে পারতেন না।
হযরত কায়েদ সাহেব হুজুর (রহ.)-এর কাছে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে কাক্সিক্ষত মর্যাদা পেতেন। ঝালকাঠি অঞ্চলের হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরা তাঁকে দেবতাতুল্য মর্যাদা দিতেন। হুজুর যখন ঢাকায় কমফোর্ট হাসপাতালে অসুস্থাবস্থায় চিকিৎসাধীন ছিলেন তখন ঝালকাঠির সকল মন্দিরে তাঁর জন্য বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছিল। মুসলিম সম্প্রদায়ের একজন মানুষের জন্য হিন্দুদের মন্দিরে প্রার্থনার আয়োজন গোটা দুনিয়ার মধ্যে নজির সৃষ্টি করেছে। হুজুর ভালো জিনিস যে কারো থেকে গ্রহণ করতে দ্বিধা করতেন না। স্রষ্টাকে নিবেদিত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘তোমার প্রেম যে বইতে পারি এমন সাধ্য নাই.....’ গানসহ অনেক গানই হুজুর নিজে গাইতেন। বাদ্যযন্ত্র ছাড়া ক্যাসেট তৈরি করে শুনতেন ও বিক্রি করার আদেশ দিতেন। নকুল কুমার বিশ্বাসের অনেক সমাজ-সংস্কারমূলক গানই হুজুর পছন্দ করতেন। হুজুর ছিলেন কর্মবীর। লোকজনকে কাজ করার উৎসাহ দিতেন। নিজের পয়সায় মাল কিনে বেকার লোকদের ব্যবসা করতে দিতেন। হুজুরের মুখে সবসময় ধ্বনিত হতো- ‘ওগো মুসলমানের ছেলে কাজ করিলে মান যাবে তোর কোন হাদিসে পেলে’।
হযরত কায়েদ সাহেব হুজুর (রহ.) বরাবরই চরমপন্থার বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেছেন। সন্ত্রাসবাদকে তিনি মনেপ্রাণে ঘৃণা করতেন। সমাজে বা রাষ্ট্রে সংঘটিত যে কোনো খারাপ কর্মকা-ের বিরুদ্ধে তিনি নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের আয়োজন করতেন। ‘সংঘাত নয় শান্তি’ এটাই ছিল হুজুরের মূলনীতি। তবে বাতিলের কাছে কখনো মাথা নত করার পাত্র হুজুর ছিলেন না। ক্ষণজন্মা এই মহাপুরুষ তাঁর কর্মময় জীবনের ইতি টেনে ২০০৮ সালের ২৮ এপ্রিল ইন্তেকাল করেন। তাঁর ইন্তেকালের খবর শুনে সারাদেশ থেকে লাখ লাখ মানুষ ভিড় জমান ঝালকাঠির নেছারাবাদে। তাঁর নামাজে জানাযায় দশবর্গ কিলোমিটার জুড়ে প্রায় পাঁচ লাখ মানুষের সমাগম ঘটেছিল।
হযরত কায়েদ সাহেব হুজুরের স্মৃতি ও আদর্শ রক্ষায় আমাদের অনেক করণীয় আছে। তাঁর আদর্শ শুধু মুখে প্রচার করলেই হবে না, বাস্তবে পরিণত করার চেষ্টা করতে হবে। মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের জন্য তিনি যে সাধনা করে গেছেন তাকে আমাদের মূল্য দিতে হবে। তাঁর লেখা বই-পুস্তক ব্যাপক আকারে মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে। হুজুরের প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানসমূহ বাঁচিয়ে রাখতে আমাদের এগিয়ে আসতে হবে। হুজুরের জীবন ও কর্ম নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায় গবেষণা করাও একান্ত প্রয়োজন। ইসলামপন্থীদের জন্য ঐক্যের প্লাটফর্ম হিসেবে ‘জমিয়াতুল মুসলিহীন’ নামে যে সংগঠন তিনি রেখে গেছেন তার হাল ধরেছেন তাঁরই সুযোগ্য পুত্র অধ্যক্ষ মাওলানা খলীলুর রহমান নেছারাবাদী। আমাদের সকলের উচিত মুসলিম উম্মাহর ঐক্য সাধনে উক্ত সংগঠনের কার্যক্রমকে দেশব্যাপি ছড়িয়ে দেয়া।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস